মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আউটশাহী ইউনিয়নের মামুদুল গ্রামে বসতঘর ভেঙ্গে পৈত্রিক ভিটা দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সময়ে এ ঘটনা ঘটে। এতে আখলেছ সৈয়াল ও মোখলেছ সৈয়াল দুই ভাই তিন শিশু সন্তানসহ স্ত্রীদের নিয়ে
বাড়ী ছাড়া হয়ে পড়েছে। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে এখন তারা কোথায় থাকবে তা নিয়ে পড়েছে দুশ্চিন্তায়। তাই বাধ্য হয়ে শনিবার সন্ধার পর থেকে তারা টঙ্গীবাড়ী থানার সামনে সড়কে অবস্থা করছে বলে জানা গেছে।
দিন-মজুর দুই ভাই অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে ৯৯৯ ফোন দিয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন। এতে অপর প্রান্ত থেকে তাদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার স্লিপ এবং পৈত্রিক বাড়ীর কাগজপত্র নিয়ে থানায় যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবারটি। তবে তারা থানায় না গিয়ে শীতের রাতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে রাস্তায় রাস্তায় হাটছেন বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ওই গ্রামের আখলেছ সৈয়াল ও মোখলেছ সৈয়াল দুই ভাই তাদের পৈত্রিক জমিতে ঘর তুলে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে আসছেন। বর্তমানে তাদের বাবা মারা যাওয়ার পরে তাদের পাশের চাষিরী গ্রামের আনোয়ার ভিস্তি নামের ব্যাক্তি ওই জমি তার বলে দাবী করছেন। ভুক্তভোগীদের বাবা ও চাচা জীবিত থাকাবস্থায় আনোয়ার ভিস্তির কাছে বিক্রি করছে বলে একটি দলিল তাদের দেখায়। সেই দলিল নিয়ে আদালতে মামলা করায় ওই জমি জোড় করে দখলে নেওয়ার অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, ৪০ বছরের অধিক সময় ধরে তারা পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত বসত ভিটায় বসবাস করে আসছেন। পার্শ্ববর্তী চাষিরী গ্রামের আনোয়ার তাদের বাবা ও চাচা আরশেদ আলী সৈয়ালের কাছ হতে এই সম্পত্তি কিনেছি বলে তাদের বর্তমানে বলছে। পরে একটি দলিলে দেখালে আমরা তার বিরুদ্ধে জাল দলিলের মামলা করি। মামলা করার পর সে আমাদের ঘরবাড়ি লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী মোখলেছ সৈয়ালকে তার দুই শিশুকে নিয়ে টঙ্গিবাড়ী থানা এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। মোখলেছ তার ছেলে রমজানকে কোলে নিয়ে ঘুরছেন অপর ছেলে মিনহাজ ও বাবার সাথে রাস্তায় হাটছেন গন্তব্যহীন পথে। এদিকে অপরভাই আখলেছ শিশু ছেলে আবিরকে সাথে নিয়ে ঘুরছেন রাস্তায় রাস্তায়।
এ ব্যাপারে মোখলেছ সৈয়াল বলেন, আনোয়ার সন্ত্রাসী নিয়ে এসে আমাদের ঘর বাড়ি ঘরের ভিতরে থাকা জীনিষ পত্র সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে। আমাদের ঘরে কিছু নাই। যে সমস্ত জীনিষ ছিলো সব নিয়ে গেছে। রাতে ঘুমানোর মতো কাথা কম্বল জীনিষ পত্র কিছু নাই সব ওরা নিয়ে গেছে।
অপর ভাই আখলেছ সৈয়াল বলেন, আমাদের ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা থানায় এসেছিলাম থানা কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ছেলে আবির বলেন, আমরা রাতে কোথায় থাকবো? থাকার মতো আমাদের কোন আশ্রয় নেই আমাদের।
মোখলেছ এর স্ত্রী খাদিজা বলেন, সকালে ওরা সন্ত্রাসী নিয়ে ঘর ভাঙতে আসলে প্রথমে আমরা টঙ্গিবাড়ী থানায় আসি। পরে আমি ৯৯৯ এ ফোন দেই। ফোন দিলে বলে আগে আপনারা হাসপাতাল যান চিকিৎসা নিয়ে ডাক্তারী সর্টিফিকেট নেন পরে আমরা বিষয়টি দেখবো।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আনোয়ার ভিস্তি মুঠোফোনে বলেন, ওই জমি আমার আমি বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ প্রশাসনের লোকজন সকলে জানে। আপনি এভাবে লোকজন নিয়ে জমি দখল করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।
এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাব্লিউ বলেন, এ ঘটনা আমাকে কেউ অবহিত করেনি, অভিযোগও দেয়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।